এবার ক্লাসেন ঝড়ের পর এবার বোলিং তোপে পড়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। রান পাহাড় তাড়া করতে নেমে ১০০ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারিয়ে ধুকছে বাটলারের দল। কোয়েৎজি-জানসেন-এনগিদি ত্রয়ীর আঘাতে গুড়িয়ে গেছে তাদের ব্যাটিং অর্ডার। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হারের লজ্জার রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছে ইংলিশদের।
এদিকে ৪০০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করতে পারেননি দুই ইংলিশ ওপেনার জনি বেয়ারস্টো এবং দাউয়িদ মালান। ইংল্যান্ড শিবিরে ইনিংসের ২ দশমিক ৩ ওভারের সময় আঘাত হানেন লুঙ্গি এনগিদি। তার বলে দলীয় ১৮ রানে ডুসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বেয়ারস্টো।
ফেরার আগে ১২ বলে এক ছয় ও এক চারে করেন ১০ রান। তিন নম্বরে নামা অভিজ্ঞ ব্যাটার জো রুটও ফিরেছেন দ্রুতই। তিনি মাত্র ২ রানে জানসেনের বলে মিলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ৫ দশমিক ১ বলে আবারও আঘাত হানেন জানসেন। এবার তার দ্বিতীয় শিকার ওপেনার মালান। ১১ বলে এক চারে ৬ রান করে ফেরেন এই ওপেনার।
২৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কাঁপতে থাকা ইংল্যান্ডের ত্রাতা হতে পারেননি দীর্ঘদিন পর ইনজুরি কাটিয়ে একাদশে ফেরা বেন স্টোকস। রাবাদার বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্টোকস। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে তিনি করেন মাত্র ৫ রান। ৮ দশমিক ১ বলে ৩৮ রান তুলতেই ইংল্যান্ড হারায় ৪ উইকেট। এরপর হ্যারি ব্রুকের সঙ্গে জবাব দিতে শুরু করেন অধিনায়ক বাটলার।
উইকেট হারালেও রানের চাকা সচল রেখে প্রথম ১০ ওভারে ৬৭ রান তুলে নেয় দলটি। তবে এই জুটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেয়নি জেরাল্ড কোয়েৎজি। দলীয় ৬৭ রানে তার বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক বাটলার। যদিও তিনি রিভিউ নিয়েছিলেন। তবে আম্পায়ারস কলে তাকে ফিরতে হয়েছে ব্যক্তিগত ১৫ রানে।
তিনি ৭ বলের মোকাবিলায় ২ চার ও এক ছয়ে এই রান সংগ্রহ করেন। একই ওভারে ব্রুককেও ফেরান কোয়েৎজি। ব্রুক ২৫ বলে করেন ১৭ রান। ইনিংসের ১৫ দশমিক ১ বলে তার তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন আদিল রশীদ। উইলি-অ্যাটকিনশনের ব্যাটে ১০০ রান তুলতেই আবার এনগিদির দ্বিতীয় আঘাত।
এবার তার শিকার হয়ে উইলি। এতে মাত্র ১০০ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে বড় হারের শঙ্কায় পড়েছে ইংলিশরা। শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়ারা কতো রানের ব্যবধানে ইংলিশদের হারাতে পারে সেটিই এখন দেখার বিষয়। এর আগে, শনিবার (২১ অক্টোবর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দু’দল। ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড।
দীর্ঘদিন পর এই ম্যাচের একাদশে ফিরেছেন তারকা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। ফিল্ডিং নিয়ে শুরুটা দারুণ হয় ইংলিশদের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে পাঠান ইনফর্ম ওপেনার কুইন্টন ডি কককে। রেস টপলির বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। যদিও ডি ককের উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে অধিনায়ক বাটলারের দক্ষতার তারিফ করতেই হয়।
আম্পায়ার জোড়ালো আবেদনে সাড়া না দিলে আত্মবিশ্বাসী বাটলার দ্রুতই রিভিউ নেন। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল ডি ককের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে গিয়েছে। তবে ডি ককের বিদায়ের পরও রানের চাকা সচল ছিল প্রোটিয়াদের। আরেক ওপেনার রেজা হেনড্রিকসের সঙ্গে তিন নম্বরে নামা ডুসেন ১২১ রানের জুটি গড়েন।
আদিল রশীদের বলে বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ডুসেন করেন ৬০ রান। ৬১ বলের মোকাবিলায় তিনি ৮টি চার মারেন। নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার অসুস্থতার কারণে এ ম্যাচে সুযোগ পাওয়া হেনড্রিকস ছিলেন আরও আগ্রাসী। মাত্র ১৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা হেনড্রিকসের ইনিংসটি সাজানো ছিল নয়টি চার ও তিনটি ছ্ক্কায়।
দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মার্করাম এই ম্যাচে অর্ধশতকের আগেই টপলির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ৪২ রানে। পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংলিশ বোলারদের ওপর শুরুতে চড়াও হন হেনরিখ ক্লাসেন। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে খেই হারায় মার্ক উড-উইলিরা। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন মার্কো জানসেন। এই জুটিতে আসে ১৫১ রান।
৬১ বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেন ক্লাসেন। অ্যাটকিনশনের বলে আউট হয়ে ফেরার আগে ১০৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। এজন্য মাত্র ৬৭ বল মোকাবিলা করেন। ১২ টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস। তবে শেষ ওভারে অ্যাটকিনশনের কামব্যাকের কারণে প্রোটিয়াদের ইনিংস আরও বড় হয়নি। ৫০তম ওভারে তিনি খরচ করেন মাত্র ৫ রান। ওই ওভারে উইকেট তুলে নেন দুইটি। শেষ পর্যন্ত জানসেন অপরাজিত ছিলেন ৭৫ রানে। ৪২ বলের ইনিংসে তিনি ছয়টি ছক্কা এবং তিনটি চার মারেন।